সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম : আমাদের স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর অর্জনের পরিমান কম নয়। স্বল্প উন্নত দেশের তুলনায় আমাদের দেশও ভাল অবস্থানে আছে। আগামি ২০২০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে আমাদের দেশটাকে মধ্যম আয়ের দেশ হিসাবে নিতে পারব। সেখানে অনেক ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে, প্রতিযোগিতা থাকবে, সেখানে ব্যবসা বাণিজ্যের সাথে টিকে থাকতে পারব, আমাদের সে ক্ষমতা আছে। আমাদের দেশে কৃষকদের ভুমিকা অনেক রয়েছে। যেমন আমাদের কৃষি ব্যবস্থাটা অনেক আধুনিক হয়েছে। তারা ক্রমাগতভাবে খাদ্য উৎপাদন করে যাচ্ছে। কৃষকদের অনেক বিপ্লব হয়েছে। তারা দিন দিন অনেক উৎপাদন করতে পারছেন । এক ফসল এর জায়গায় তিন ফসল উৎপাদন হচ্ছে। মানুষের চোখ জাহাজ শিল্প থেকে অনেক শিল্পে এগিয়ে গিয়েছে।এরপর আমাদের আউটসোর্সিং এর উন্নতি হয়েছে। আইসিটি খাতে ২০৩০ সালে মধ্যে ১৫ মিলিয়ন ডলার প্রতি বছর আয় করতে পারব। এছাড়া গার্মেন্টস থেকে অর্থনৈতিকভাবে যা আয় হয়, তার কিছু অংশ ব্যয়ও হয় গার্মেন্টেস এর কাচাঁমাল ক্রয়ের জন্য। আমরা পদ্মা সেঁতু নিজেদের টাকায় তৈরি করছি, এটাই আমাদের অর্জন। বাংলাদেশে প্রত্যেকটা বিষয়ে গতিশীলতা আছে , অর্থনৈতিক গতিশীলতা উন্নত হচ্ছে। কিন্তু উন্নয়নের সফলতা সবার ঘরে ঘরে পৌছে দিতে পারছি না। এটা আমাদের ব্যর্থতা। আমাদের দেশের দারিদ্র্যর্তা বাড়ছে। দ্রারিদ্যের সাথে বৈষম্য বাড়ছে। আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটাতে হলে আগে শিক্ষার উন্নয়ন ঘটাতে হবে। আমাদের দেশে শিক্ষার বিস্তার বাড়ছে কিন্তু শিক্ষার মান উন্নত হয়নি। এটা আমাদের একটা বড় সমস্যা। শিক্ষার মান যদি না বাড়ে, তাহলে আমাদের সক্ষমতা, সম্ভাবনা দূরে চলে যাবে। আমরা শিক্ষার মানটা এমনভাবে বাড়াব যেন বিশ্বের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারি। বিশেষ করে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সাথে টিকে থাকতে হবে। আমাদের এখনও এসকল বৈষম্য থেকে যাচ্ছে। আমাদের দেশে উগ্রবাদের বিস্তার ঘটছে, সামাজিক শৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে। সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারছি না। এটার পিছনে যত গুলো কারণ আছে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, মানসম্পন্ন শিক্ষার অভাব। আমরা ক্রমাগত পরিক্ষা সংখ্যা বাড়িয়েছি কিন্তু এতে শিক্ষার মান বাড়েনি। আমরা ভাল শিক্ষক তৈরি করতে পারিনি। ভাল শিক্ষক না হলে ভাল শিক্ষা দিতে পারবে না। শিক্ষায় বিনিয়োগ আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ি করতে পারিনি। অন্যান্য উন্নত দেশের মতন শিক্ষায় বিনিয়োগ করতে পারিনি। তাই আমাদের শিক্ষাক্ষেত্রে প্রচুর বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এরপর আমাদের দুর্নীতি ও আমাদের স্বার্থপরতা অনেক বেশি। যদি শিক্ষার ক্ষেত্রে দুর্নীতি থাকে, তাহলে বুঝতে হবে এটা আমাদের মৌলিক সমস্যা। এই শিক্ষার মান বাড়াতে হলে দুর্নীতিকে নির্মূল করতে হবে। এরপর আমাদের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে দুর্নীতি অনেক বেশি। রাজনীতিতে মারামারি, হানাহানি, হিংসা, দ্বন্ধ অনেক বেশি। এগুলো থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
পরিচিতি : শিক্ষাবিদ
মতামত গ্রহণ : রাশিদুল ইসলাম মাহিন
সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ
আপনার মতামত লিখুন :