হিরন্ময় ভট্টাচার্য, গুয়াহাটি : ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কংগ্রেস শাসিত রাজ্য মেঘালয় ও মিজোরামে সরকারি সফরে এসে ভোটের প্রচার সারলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
কংগ্রেস শাসিত মেঘালয়ে বিধানসভা নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে। আর মিজোরামে ভোট ২০১৮ সালের নভেম্বরে। গোমাংস নিয়ে বিতর্কের জেরে অনেকেই এখনো বিজেপির গোরক্ষা বাহিনীর ওপর ক্ষিপ্ত। পাহাড়ি খ্রিষ্টানদের অত্যন্ত প্রিয় গরুর মাংস। কিন্তু বিজেপির জমানায় সেই গরুর মাংসে নিষেধাজ্ঞা জারির চেষ্টায় প্রচ- ক্ষিপ্ত মিজোরাম ও মেঘালয়ের খ্রিষ্টান সমাজ। মানুষের খাদ্যের স্বাধীনতা হরণ বলে ইতিমধ্যে অনেকে বিজেপি ছেড়েছেন।
এটা মাথায় রেখেই শনিবার নরেন্দ্র মোদি সফরের শুরুতেই মিজোরামে সবাইকে বড়দিন আর ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান। মিজোরামের রাজধানী আইজলের আসাম রাইফেলস ময়দানে আয়োজিত সভায় প্রশংসায় ভরিয়ে দেন মিজো-জনতাকে। সেই সঙ্গে মোদির গলায় শোনা গেল একের পর এক উন্নয়নের বার্তা।
এদিন তিনি মিজোরামের ৬০ মেগাওয়াট তুইরিয়াল জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। তিনি বলেন, ১৯৯৮ সালে এই প্রকল্পের অনুমোদন করেছিলেন অটলবিহারি বাজপেয়ি। আর এদিন রাজ্যকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের তৃতীয় বিদ্যুৎ স্বয়ম্ভর রাজ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারই চালু করল তুইরিয়াল বিদ্যুৎ প্রকল্পের। ৪৫ বর্গকিমির বিশাল জলাশয় মাছ চাষের জন্য নতুন দরজা খুলে দেবে বলেও তিনি দাবি করেন। জানান, পর্যটন উন্নয়নে কাজে লাগানো হবে এই জলাশয়কে।
এদিনই শিলংয়ে দুটি জাতীয় সড়কের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। মোদির দাবি, তাঁর সরকার যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নে সাফল্যের সঙ্গে কাজ করে চলেছে। ১০ হাজার কোটি টাকা খরচ করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রতিটি রাজ্যে রেল পৌঁছানোর কথাও এদিন ফের ঘোষণা করেন তিনি।
মোদি বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ১১৫টি জেলার উন্নয়ন ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই এখানকার পিছিয়ে পড়া অঞ্চলের উন্নয়নে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে তাঁর সরকার।
নরেন্দ্র মোদি এদিন মিজোরামে তুইরিয়াল জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্বোধন করলেও স্থানীয় ব্যক্তিদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে এই প্রকল্পের জন্য। সইপুম গ্রামের বাসিন্দাদের তরফে রাজ্যের এনজিওগুলো একযোগে বিরোধিতা করছে তুইরিয়াল জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের। তাদের অভিযোগ, ভূমিহারা মানুষকে ক্ষতিপূরণ না দিয়েই মোদি সরকার প্রকল্পের সূচনা করছে ঘটা করে।
মেঘালয়ে সড়কপথের উদ্বোধন করে রেল নিয়ে বার্তা দিলেও এখনো প্রস্তাবিত রেললাইন নিয়ে জট কাটেনি। জমি অধিগ্রহণ নিয়ে বড় ধরনের সমস্যা রয়ে গিয়েছে মেঘালয়ে। কংগ্রেসের অভিযোগ, সেই সমস্যার মোকাবিলা না করে ভোট প্রচারেই বেশি মন দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি।
আপনার মতামত লিখুন :